খেলাধুলা যেনো আমাদের ক্ষতির কারণ না হয় - আলমগীর কাইজার
খেলাধুলা যেনো আমাদের ক্ষতির কারণ না হয়
- আলমগীর কাইজার
- আলমগীর কাইজার
খেলাধুলা নিয়ে আমার জ্ঞান শূন্যের কোটায়। তবুও খেলা নিয়ে সবার ঝগড়া হিংসা ঠেলাঠেলি বিরোধিতা চুলচেরাচিরি দেখে যতটুকু জ্ঞান হয়েছে তা দিয়েই দুএক লাইন লেখার চেষ্টা করছি।
খেলাধুলা হলো এক ধরনের ব্যায়াম এবং বিনোদনও বটে,
তবে ঝগড়া-গণ্ডগোল, তর্ক, রাগারাগি করার মতো কোনো বিষয় নয়, এটা স্পষ্ট। মঞ্চে বসে খেলা দেখার চেয়ে মাঠে নেমে খেলা করা অধিক শ্রেয়।
কিন্তু সমস্যা হলো, যদি খেলা না পারি তবে কি করবো?
যদি একান্তই না পারি তবে খেলার মাঠে খেলার নামে দৌড়াদৌড়ি করব, লাফালাফি করব, খেলা না পারি তবুও খেলার ভান করব।
তবে ঝগড়া-গণ্ডগোল, তর্ক, রাগারাগি করার মতো কোনো বিষয় নয়, এটা স্পষ্ট। মঞ্চে বসে খেলা দেখার চেয়ে মাঠে নেমে খেলা করা অধিক শ্রেয়।
কিন্তু সমস্যা হলো, যদি খেলা না পারি তবে কি করবো?
যদি একান্তই না পারি তবে খেলার মাঠে খেলার নামে দৌড়াদৌড়ি করব, লাফালাফি করব, খেলা না পারি তবুও খেলার ভান করব।
আমাদের সমস্যা হলো মাঠে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করার মতো যতেষ্ট সময় কোথায়?
না, আমাদের মাঠে যাওয়ার মতো যথেষ্ট সময় নেই, তবে ঘরে বসে ওই খেলা নিয়ে তর্ক বিতর্ক ঝগড়া করার মত যথেষ্ট সময় আছে।
খেলাধুলা যখন মাঠ ছেড়ে বেডের উপর কিংবা কর্মক্ষেত্রে তর্কে-বিতর্কে চলে আসে তখন আর সেটা খেলাধুলা থাকেনা তখন সেটা হয়ে যায় আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর বিষ।
না, আমাদের মাঠে যাওয়ার মতো যথেষ্ট সময় নেই, তবে ঘরে বসে ওই খেলা নিয়ে তর্ক বিতর্ক ঝগড়া করার মত যথেষ্ট সময় আছে।
খেলাধুলা যখন মাঠ ছেড়ে বেডের উপর কিংবা কর্মক্ষেত্রে তর্কে-বিতর্কে চলে আসে তখন আর সেটা খেলাধুলা থাকেনা তখন সেটা হয়ে যায় আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর বিষ।
যখন একটা দেশের প্রতিটি মানুষ একই বিষয় নিয়ে চিন্তা করে কিন্তু যে বিষয় নিয়ে চিন্তা করে সেই বিষয় দেশের কোন ক্ষুদ্র উপকারেও আসে না তখন বুঝতে হবে সেই দেশের মানুষ সেই দেশের উন্নতির জন্য কোন কাজে আসছে না।
কিছুদিন আগেও যারা স্টার জলসার চুল ছেঁড়াছিঁড়ি টাইপের সিরিয়াল বন্ধের জন্য আন্দোলন করেছিল তারা আজ নিজের কাজ বন্ধ করে ফুটবল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে, যদিও এইসব চুলচেরা বিশ্লেষণ নিজের দেশের ফুটবলের কোনো উপকারে আসবে না বরং আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে বিরোধিতা, হিংসা, ঝগড়া, তর্কের বীজ বপন করা হচ্ছে।
এদেশের সকল মানুষ ফুটবল বিশেষজ্ঞ মেনে নেওয়া যায় কিন্তু যে ছেলেটা এখনো হাত দিয়ে ফুটবল খেলে, মায়ের হাতে ভাত খায়, সে কি করে ফুটবল দলের সাপোর্টার হয়?
কোন দলের সাপোর্টার হওয়া খারাপ কিছু না কিন্তু এন্টি সাপোর্টার হওয়া অবশ্যই খারাপ বিষয়। খেলা থেকে যেখানে বিনোদন পাওয়ার কথা সেখানে আমরা পাচ্ছি উচ্চরক্তচাপ।
কোন দলের সাপোর্টার হওয়া খারাপ কিছু না কিন্তু এন্টি সাপোর্টার হওয়া অবশ্যই খারাপ বিষয়। খেলা থেকে যেখানে বিনোদন পাওয়ার কথা সেখানে আমরা পাচ্ছি উচ্চরক্তচাপ।
খেলা নিয়ে আমাদের এতো বাড়াবাড়ি কেনো? আমরা কি চিন্তা করার মতো কোনো বিষয় কিংবা ইস্যু পায় না? নাকি আমাদের কর্মক্ষেত্র বা পরিবার কিংবা নিজেকে নিয়ে আমরা সুখী নই? হয়তো আমরা সুখী নই, তাই অন্যকে ছোট করে আমরা নিজেরা সুখী হওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও এটা নিজের সাথে এক ধরনের প্রতারণা।
আমরা রাস্তার ধারে ধারে প্রজেক্টর দিয়ে খেলা দেখার আয়োজন করি, তবে কি আমরা আমাদের পরিবারে নিয়ে সুখী নই? যেখানে অন্যদেশের মানুষেরা নিজেদের পরিবার নিয়ে খেলা উপভোগ করে। আমরা কেনো পরিবারের সাথে একসাথে খেলা দেখি না?
আমরা যতটা আদেখলাপনা করে অন্য দেশের পতাকা টাঙাই ওই দেশের মানুষ কি নিজের দেশের পতাকা নিজের দেশে এতগুলো টাঙাই?
যদি আমরা আমাদের এসব ভুলগুলো শুধরে না নিই তবে আমাদের এই সব ভুলগুলো আমাদেরকে একটা ঝগড়াযুক্ত দ্বন্দময় সমাজ উপহার দেবে। আমাদের মধ্যে দ্বান্দ্বিক মনোভাব গড়ে উঠবে। অন্যকে সহ্য করা কিংবা অন্যের মতকে সহ্য করার মত ক্ষমতা আমাদের মাঝে থেকে লোপ পাবে।
খেলা নিয়ে এমন কুচর্চা আমাদের কারোরই কাম্য নয়।
আমরা যদি খেলাকে উপভোগ করি, খেলার সময় অন্যের মতকে সম্মান করি, নিজের মত অন্যের উপর চাপিয়ে না দিই তবে এর প্রতিফলন আমাদের বাস্তব জীবনে চলে আসবে। তখন আমাদের বাস্তব জীবন হবে খেলাধুলার মতো সুন্দর এবং আনন্দময়। তখন আমরা প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠবো।
সুন্দরের প্রত্যাশাই সবাইকে ধন্যবাদ।
আমরা যদি খেলাকে উপভোগ করি, খেলার সময় অন্যের মতকে সম্মান করি, নিজের মত অন্যের উপর চাপিয়ে না দিই তবে এর প্রতিফলন আমাদের বাস্তব জীবনে চলে আসবে। তখন আমাদের বাস্তব জীবন হবে খেলাধুলার মতো সুন্দর এবং আনন্দময়। তখন আমরা প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠবো।
সুন্দরের প্রত্যাশাই সবাইকে ধন্যবাদ।
-আলমগীর কাইজার
খেলাধুলা |
No comments