আত্মার ছবি - রুমির কবিতা ৩৬

ও আমার আত্মা, 
আমরা যাকে বিশ্ব বলে ডাকি
ছয়-পার্শ্বযুক্ত সেই আয়নাবাক্সের 
প্রতিটি দিকেই তোমার ছবি আছে,
কিন্তু আয়না তো শুধুমাত্র তার ক্ষমতা অনুযায়ী 
প্রতিফলিত করতে পারে,
আত্মার উন্নতির পর্যায়গুলো
চিত্রিত করতে পারে না।
সূর্য তার ভিতরের সূর্যকে জিজ্ঞাসা করে–
‘আমি তোমাকে কীভাবে দেখতে পারি?’
ভিতরের সূর্য উত্তর দেয়–
‘যখন তুমি অস্ত যাও তখন আমি উঠি।’

বুদ্ধি আত্মাকে একটি গাধার মতো 
পায়ে বাঁধন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, 
ভালোবাসা আত্মার সাতটি স্তরের সাথে
জড়িয়ে থাকতে চায়, 
কিন্তু কোনো ইচ্ছাই পূরণ হওয়া সম্ভব নয়।
মাঝে মাঝে একটি ফসলের মাঠে
খণ্ডিত কাণ্ড এবং খড়কুটোর ধুলোজালে 
মনেহয় একটি শস্যদানারও পা এবং ডানা আছে।
এটাই আত্মার রাজ্যে মনের প্রভাব।

সাগরের মাঝে একবার তুমি দেখেছ আত্মা কেমন।
তখন থেকেই বিস্ময় তোমাকে ভাসিয়ে রেখেছে।
যখন আত্মা প্রশ্ন করে
তখন সোনার দুলের আনন্দ 
সকলের কান উপভোগ করে।
ব্যক্তিত্ব একটা ছোটো কুকুরের মতো 
যে আত্মাকে বাধ্য করার চেষ্টা করে।

আমি তোমার ডাক শুনছি 
এবং পা ছাড়াই পথে হাঁটছি।
তোমার কাজের মতো
আমরা কি কোনো কাজ করতে পারি?
যেভাবে তুমি করো দিন-রাত?
আমরা তোমার গাছের নিচে ছায়া। 
তুমি আছ বলেই
আদম আত্মিক জগত ছেড়ে চলে গেছে,
তুমি ডেকেছ তাই।
ভালোবাসা তোমার স্পর্শে বয়ে চলা সাগরের ঝড়।
এই বিষয়ে তোমার কথা জানতে 
আমাকে অবশ্যই কথা বলা বন্ধ করতে হবে।

কবিতাঃ আত্মার ছবি
কবিঃ জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি 
অনুবাদঃ আলমগীর কাইজার 
(কোলম্যান বার্কসের দ্য সোল অব রুমি বই থেকে)

No comments

Powered by Blogger.