অন্তঃসার - রুমির কবিতা ৩৮
এই আপেলের বাগানটি যিনি সৃষ্টি করেছেন
তিনি এটাকে ভাষার রহস্যে লুকিয়ে রেখেছেন,
যদিও কিছু সুগন্ধ বেরিয়ে আসে।
সেই সুগন্ধের ঘ্রাণ পেতে
তোমার নাক সূক্ষ্ম ও উন্মুক্ত রাখতে হবে।
কর্কশ কণ্ঠের সঙ্গীরা তোমাকে
আঠালো অস্তিত্বে আটকে দিতে পারে,
যাতে তুমি শব্দের রহস্যে লুকানো বিষয় ভুলে যাও।
হুসামুদ্দিনের সূর্যালোক তাকে সাহায্য করেছিল
যা এই বইয়ে জ্বলজ্বল করছে।
কুজুহ নামের একটি সত্তা আছে,
যা মেঘ এবং রংধনু
বরফ-চাঁদ এবং হিমশীতল কবরের সঙ্গে পরিচিত।
কুজুহের জন্য ওই আচ্ছাদনগুলো ছেড়ে দাও।
মূলের গভীরে প্রবেশ করো,
যেখানে সাতটি নীল গ্রহ আবর্তিত হয়।
শুক্র কবিতার আসল রস বের করতে
বীণার তার স্পর্শ করে।
বৃহস্পতি অর্থ জমা করে।
এমনকি শনি হাতে চুম্বন করতে ঝুঁকে পড়ে বলে–
‘আমি যোগ্য নই।’
মঙ্গল তার অস্ত্র ধার করতে গিয়ে নিজেকে কাটে।
জ্যোতিষীরা নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করে
কীভাবে নক্ষত্ররা অদৃশ্য হয়ে যায়।
দার্শনিকরা ‘ভাবনা’ নিয়ে আলোচনা করে,
কিন্তু এই ভাবনার মানে কী?
আধ্যাত্মিক কবিরা রূপক তৈরি করে।
ভোগবাদীরা মিষ্টান্নের আদেশ দেয়।
রুটি মিশে যায় পেটে।
প্রতিটি মুখ আলোর দিকে তাকায়।
খনিজ পদার্থ যেমন উদ্ভিদের মধ্যে ভ্রমণ করে,
পশুরা যেমন ভিজে ঘাস থেকে তৃষ্ণা মেটায়,
খিজির তেমনি জ্ঞানের সন্ধানে বসন্তের দিকে ঝুঁকে পড়ে,
অন্য একটি সত্তা বন্ধুর মতো কোরে
তার বোঝা হালকাভাবে নামিয়ে দেয়।
জীবন কখনো শেষ হয় না।
কবিতাঃ অন্তঃসার
কবিঃ জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি
অনুবাদঃ আলমগীর কাইজার
(কোলম্যান বার্কসের দ্য সোল অব রুমি বই থেকে)
No comments