হাঁসের বুদ্ধি - রুমির কবিতা ৩৯

ইউসুফ কে?
তোমার হৃদয়, যে সত্য খুঁজছে
সেই হৃদয় এখন কারাগারে বন্দী।
যখন তুমি মুখোমুখি সাক্ষাৎ ছাড়া আর কিছুই চাও না
তখন তারা তোমাকে খাওয়ানোর জন্য  
মাটি থেকে খড় তুলে আনে।
বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জন্য কিছু আমন্ত্রণ আসে
যা বিপজ্জনক।
ইউসুফ তার পিতার আশ্রয় ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। 
তার ভাইয়েরা বলেছিল, ‘এটা খুব মজার হবে।’

আনন্দ লাভ কিংবা টাকা-পয়সার জন্য
কখনো বন্ধুকে ত্যাগ কোরো না। 
কোষাধ্যক্ষ নিজেই তোমাকে বলবে–
তোমার টাকা শতগুণ বাড়িয়ে দেবো,
কিন্তু এর বিনিময়ে স্রষ্টার বন্ধুকে ছাড়তে হবে।
কখনোই এটা কোরো না।

একবার এক দুর্ভিক্ষের বছরে,
মুহাম্মদ (সা.)-এর কিছু সঙ্গী 
তার কাছ থেকে চলে গিয়েছিল 
যখন তারা শুনেছিল একটা বড়ো কাফেলা আসছে। 
তারা চেয়েছিল, তাদের কাছে যা খাবার ছিল 
তা শেষ হওয়ার আগেই কিছু সংগ্রহ করতে। 
রুটি কিনতে একজন নবীকে ছেড়ে যেয়ো না!
তারা গমের দিকে ছুটছিল, 
কিন্তু গমের মালিকের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল।
ধন-সম্পদ কিংবা যেকোনো সন্তুষ্টির চেয়ে 
বন্ধুত্বের উপর বেশি বিশ্বাস করো।

একদিন একটি বাজপাখি একটি হাঁসকে 
জলাশয় ছেড়ে উঁচু মালভূমি দেখতে আমন্ত্রণ জানায়।  
জ্ঞানী হাঁস বলে–
‘পানি আমার শক্তি, আমার শান্তি, আমার সুখ। 
তুমি যেখানে থাকতে ভালোবাসো 
সেখানে যেতে আমাকে প্রলুব্ধ কোরো না।
তোমার আছে উড়াল দেয়ার ক্ষমতা, 
কিন্তু আমি এখানেই থাকতে চাই, 
এখানে থাকতেই আমি পছন্দ করি।’
হাঁসটি তার নিরাপদ জায়গায় রয়ে গেল।
তুমি যেখানে অন্ধকারে বসে আছো, 
সেখানেই ধৈর্যধারণ করো।
শীঘ্রই ভোর আসছে।
 
কবিতাঃ হাঁসের বুদ্ধি
কবিঃ জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি 
অনুবাদঃ আলমগীর কাইজার 
(কোলম্যান বার্কসের দ্য সোল অব রুমি বই থেকে)

No comments

Powered by Blogger.